এই ভ্রমণ গাইডের মাধ্যমে আপনি জাপানের দর্শনীয় স্থান থেকে শুরু করে ঢাকা টু জাপান বিমান ভাড়া, ভিসা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, হোটেল খরচ ও ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন।
ভিসাঃ
জাপান ভ্রমনের জন্য আপনার প্রথমত ট্যুরিস্ট ভিসার প্রয়োজন হবে। জাপান বাংলাদেশী ট্রাভেলারদের জন্য ৯০ দিনের ট্যুরিস্ট ভিসা ইস্যু করে থাকে। আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলি সুন্দরভাবে গুছিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ঢাকাস্থ অ্যাম্বাসিতে গিয়ে জমা দিবেন। আপনি সকাল ৯ টায় গিয়ে অ্যাম্বাসিতে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করবেন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই যে, জাপান ট্যুরিস্ট ভিসায় আবেদনের জন্য কোনো প্রকার অ্যাম্বাসি ফি লাগেনা। সাধারনত ভিসা প্রসেসিং এর জন্য ৭-১০ কর্মদিবস সময় লাগে। আপনার যদি ৩-৪ টি ভালো দেশ ভিজিট থাকে যেমন- থাইল্যান্ড ,মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর,দুবাই, ভিয়েতনাম ইত্যাদি এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট যদি ভালো থাকে তাহলে ভিসা হওয়ার পসিবিলিটি বেড়ে যায়।
এবার জেনে নেই ,জাপান ট্যুরিস্ট ভিসায় আবেদনের আপনার কি কি ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে-
১. বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ সহ) এবং পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে)
২. সম্প্রতি তোলা ছবি ২ কপি (২*১.৪ ইঞ্চি) সাইজ এবং রঙ্গিন সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড হতে হবে।
৩.অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম ।
৪.জাপান ভ্রমণের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা।
৫.অগ্রিম ফিরতি টিকেট ।
৬.এয়ারলাইন্স ও হোটেল বুকিং স্লিপ ।
৭. বিগত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৮. চাকুরিজীবীর ক্ষেত্রে চাকরির প্রশংসাপত্র, অনাপত্তি সনদ, বেতন স্লিপ ইত্যাদি।
৯. আপনি ব্যাবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স/ ইনকর্পোরেশন সার্টিফিকেট, বিজনেস কার্ড ও প্রতিষ্ঠানের লেটারপ্যাড।
১০. ট্যাক্স-আয় সার্টিফিকেট এবং পেমেন্ট রসিদ (সর্বশেষ 3 বছর) (যদি থাকে)
১১. জাপানের স্থায়ী কারো ইনভাইটেশনাল লেটার (যদি থাকে)
ঢাকা টু জাপান কিভাবে যাবেন এবং বিমান ভাড়াঃ
জাপান ভিসা পাওয়ার পর আপনি ঢাকা টু জাপান যাওয়ার জন্য ফ্লাইট টিকেট করবেন।ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে আপনি জাপানের রাজধানী টোকিওতে যেতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে ১০টির বেশি এয়ারলাইন্স ফিরতি টিকেটসহ ফ্লাইটের সুবিধা দিয়ে থাকে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স ,মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, সিংগাপুর এয়ারলাইন্স , থাই এয়ারওয়েজ, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস ইত্যাদি এয়ারলাইন্স এ জাপান যেতে পারেন। ভ্রমনের ১ মাস আগে টিকেট কনফার্ম করার চেষ্টা করবেন তাহলে কম প্রাইসে ফ্লাইট টিকেট পাবেন। ঢাকা টু জাপান বিমান ভাড়া ৪৩,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়। এয়ারলাইন্স এর উপর নির্ভর করে ঢাকা থেকে টোকিওতে যেতে সময় লাগবে প্রায় ৮-১৬ ঘন্টার মতো। আগে থেকেই আপনি জাপান ভ্রমনের রেল পাস ( JR Pass) বুকিং দিয়ে রাখবেন। আর যাওয়ার সময় প্রয়োজন অনুযায়ী US Doller নিয়ে যাবেন।
টিপসঃ
টোকিওর হেনেদা এয়ারপোর্ট শহর থেকে বেশ কাছে। টোকিও এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে Money exchange Counter থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী Doller exchange করে নিবেন অথবা আপনার হোটেলের পার্শ্ববর্তী exchange Counter থেকেও Doller exchange করে নিতে পারবেন, যদিও সব জায়গায় card এর মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায় কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় ক্যাশ পেমেন্ট দিতে হয়। এয়ারপোর্ট থেকে বের হওয়ার আগে JR অফিসে গিয়ে JR Activate করে নিবেন। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের জন্য Suica card কিনে নিতে পারেন।
এরপর আপনি এয়ারপোর্ট থেকে সিম কিনে নিবেন।
এখন আমরা জাপান এর হোটেল খরচ সম্পর্কে জেনে নেইঃ
হোটেল বুক করার জন্য আপনি Booking.com অথবা Agoda.com Website visit করে হোটেল রুম বুক করতে পারবেন। সব থেকে ভালো হবে যদি আপনি আগে থেকেই হোটেল কনফার্ম করে রাখেন। মুজি গিনজার, গেস্ট হাউজ ট্রেস,ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলার হাউজ হিকারি, স্টায়তো, হোটেল নিউ তছিগিয়া ইত্যাদি হোটেলগুলোতে আপনি ৩৩০০-৪৪০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারবেন।
জাপানের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কেঃ
জাপানে গিয়ে আপনি অবিস্মরনীয় অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পারবেন। যেমন সেখানকার চারপাশে সুদৃশ্য কাঠের ছোট ছোট ঘর, সেখানকার ছিমছাম রাস্তা সবমিলিয়ে আপনাকে দারুনভাবে বিমোহিত করবে। আপনি যাই দেখুন না কেন মনে হবে যেন কোন এক দক্ষ শিল্পীর সৃষ্টি। জাপানিদের উন্নত রুচিবোধ, সৌন্দর্যজ্ঞান, শ্রমলব্ধ সাধনা, প্রকৃতিবন্দনা এবং শিল্পচর্চার প্রতি ভালোবাসা এগুলোর পরিচয় বহন করে। জাপানের টোকিও এবং কিয়োটোতে আপনি বিভিন্ন মন্দির, রাজপ্রাসাদ, জাদুঘর, অ্যাকোয়ারিয়াম, কৃত্রিম দ্বীপ, সমুদ্র সৈকত, আগ্নেয়গিরি ইত্যাদি দেখতে পারবেন।
জাপানের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে টোকিওর স্কাই ট্রি, মাউন্ট ফুজি, ইমপেরিয়াল প্যালেস, হিরোশিমা জাদুঘর , মিয়াজিমা আইসল্যান্ড, হিদা-ওসাকা ওয়াটার ফলস, কিয়োতোর ব্যাম্বো ফরেস্ট এবং ওকিনাওয়ার ক্রিস্টাল সমুদ্র সৈকত, ইযু আইল্যান্ড ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়।
এছাড়া সাগানো ব্যাম্বো ফরেস্ট-আরাশিয়ামায় বসন্তে চেরি ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য , কাউয়াচি ফুজি গার্ডেনের প্রধান আকর্ষণ ওয়েস্টেরিয়া ফুলের নানা রঙের ক্যানভাস , অপরূপ সৌন্দর্য আর অনন্য গঠনের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট ফুজি দেখতে ভুলবেননা কিন্তু। টোকিও স্কাই ট্রিতে সূর্যাস্তের ২ ঘন্টা আগে যাওয়া ভালো। অনলাইন বা এজেন্সির মাধ্যমে টোকিও স্কাই ট্রির টিকেট কাটার চেষ্টা করবেন। প্রায় প্রতি বছর সব দেশের পর্যটকরা এই দেশে ভ্রমণ করতে যায় । আপনিও চাইলে এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।
গ্লোবার্ড ট্রাভেলের সাথে আপনার জাপান ভ্রমণ হবে আরও সহজ!
আশা করি সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার পরে আপনারা জাপান ভ্রমণের সমস্ত খুঁটিনাটি জেনেছেন। বিশেষত অক্টোবর থেকে নভেম্বর ও মার্চ থেকে মে পর্যন্ত জাপানে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে,এই সময়টিতে চাইলে ঘুরে আসতে পারবেন।
জাপানের দর্শনীয় স্থানগুলোর ভিসা প্রসেসিং ও ভ্রমন সংক্রান্ত যাবতীয় সহযোগিতার জন্য আপনার পাশেই আছে Globird Travels। Globird এক্সপার্ট টিম আপনার জাপানের ভিসা প্রাপ্তিতে সর্বাত্নক সহযোগিতা করবে। আমাদের জাপান ভ্রমণ প্যাকেজের সুবিধাগুলি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেননা। এছাড়া ভ্রমনসংক্রান্ত যেকোনো তথ্য ও সহায়তা পেতে ইমেইল করুন globirdtravel@gmail.com -এ অথবা কল করুন +8801877444482 নম্বরে।
গ্লোবার্ড ট্রাভেল